ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার বানিজ্যিক ভবন নির্মানে বিল্ডিং কোড আইনের প্রয়োগ নেই!

মনির অাহমদ,কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি :::
চকরিয়ার পৌর শহরের বানিজ্যিক মার্কেট ও ভবন নির্মানে বিল্ডিং কোড আইন লঙ্ঘন করে নির্মান হয়েছে এমন অভিযোগ উঠেছে সচেতন মহলে। এমন কি অধিকাংশ ভবনে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা জানান, চকরিয়া পৌর শহরের মার্কেট ও ভবন নির্মানে কোন ধরণের নিয়ম-নীতি না মানা হয়নি। পৌর ইমারত আইন লঙ্গণ করে যত্র-তত্র গড়ে উঠেছে বহু বাণিজ্যিক মার্কেট। বিধানানুযায়ী পার্কিং সহ সুপ্রস্থ গলিপথ, শৌচাগার, ডাষ্টবিন রাখার বিধান থাকলেও বাণিজ্যিক দিক বিবেচনায় কতিপয় মহল নিজেরে উদ্যোগে কিংবা স্বঘোষিত ডেভেলফার কোম্পানীর মাধ্যমে একের পর একে গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন-কিংবা বাণিজ্যিক স্থাপনা। এর মধ্যে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মেইড রোড লাগোয়া চিরিংগা ষ্টেশনে আনোয়ার শফিং কম্প্লেক্সে কয়েকটি শৌচাগার থাকলেও হাজেরা শপিং কমপ্লেক্স, আবদুল মতলব শপিং কমপ্লেক্স, আব্বাস প্লাজা, ইউনুছ প্লাজা, সুপার মার্কেট, নিউ সুপার মার্কেট, ওয়েষ্টার্ণ প্লাজা, আমেনা শপিং সেন্টার,সহ অসংখ্য বাণিজ্যিক ভবনে শৌচাগার নাই, নাই পার্কিং সহ ইমার্জেন্সী অগ্নি নির্বাপক গলি। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারন জানিয়েছেন, মার্কেটের সাধারণ ক্রেতাদের চলাচলের সহজ পথ বন্ধ করে মার্কেট মালিক জনৈক আনোয়ার হোসেন গং তাদের মার্কেট লাগোয়া পাকা দেয়াল নির্মাণ করার ফলে ১৯এপ্রিল সকালে সিগেরেটের আগুন থেকে ক্ষুদ্র অগ্নিকান্ডে পুরো মার্কেটে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ভয়ে সাধারণ মানুষ ছুটাছুটি করলে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। এমনকি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক দিয়ে দুটি গলিপথ থাকলেও তা বন্ধ থাকায় মানুষ কোথাও গিয়ে একটু নি:শ্বাস নেবার সুযোগটিও পায়নি। আহত হয়েছেন অনেকে। তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে বড় কোন অগ্নিকান্ড কিংবা অন্যকোন দূর্ঘটনা হলে মার্কেটের ভেতরে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাবে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মার্কেটের ভেতরে বন্ধ করে দেওয়া গলিপথ উন্মুক্ত করে দিতে ইতিপূর্বে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চকরিয়া বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছিল যা বর্তমান পৌর মেয়রের তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযোগকারীরা মার্কেট বন্ধ করে দেওয়া গলিপথ খোলে দিতে পৌর পিতার দৃষ্টি কামনা করেছেন।
তারা জানান,পৌর শহরের বাণিজ্যিক মার্কেটের ভেতরে একটি দোকানের ডেকোরেশনের কাজ করতে গিয়ে ময়লা আবর্জনার স্তুপ থেকে সিগেরেটের ফেলে দেওয়া অবশিষ্ট ফিল্টার থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আকর্ষ্মিক এ অগ্নিকান্ডে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও মার্কেটের ভেতরে বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় মার্কেটে আসা সাধারণ ক্রেতারা ছুটাছুটি করতে গিয়ে গলিপথ বন্ধ থাকায় চরম বিপদের সম্মুখিন হয়েছে। গত ১৯এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্স সংলগ্ন মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে।
এ প্রসঙ্গে পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী জানিয়েছেন, মার্কেট মালিকদের নিয়ে তিনবার বৈঠক হয়েছে। সরে জমিনে তদন্ত করে খুব দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মার্কেটের ভেতরে অগ্নিকান্ডের স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। পৌর মেয়রের কাছে তদন্তাধীন অভিযোগটি সুরহা হয়ে গেলে তিনি সরে জমিনে গিয়ে মার্কেটের গলিপথ খোলে দেয়ার আশ্বাস দেন।
সচেতন মহলের দাবী, চকরিয়ার পৌর শহরের বানিজ্যিক মার্কেট ও ভবন নির্মানে বিল্ডিং কোড আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।এমন কি অধিকাংশ ভবনে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও নেয়া হয়নি। বিল্ডীং কোড নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরোদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত করে জরিমানা সহ মামলার বিধানের প্রয়োগ করার ও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

পাঠকের মতামত: